বংশগত চুল পড়া রোধে Minoxidil এর কার্যকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম
চুল পড়া ছেলেদের জন্য এক বিরাট সমস্যা।তারা এটি নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকে।চুল পড়া রোধ করতে যেখানে যেই সমাধান শুনে সেটাই চেষ্টা করে দেখে।কোনোটায় উপকার পেয়ে থাকে,কোনটায় পায় না।ঘরোয়া বিভিন্ন পদ্ধতি থেকে শুরু করে তেল,শ্যাম্পু,ঔষধ কোনোটায় বাদ রাখে না।
তবে চুল পড়া রোধে এবং নতুন চুল গজাতে US Food & Drug Administration(FDA) অনুমোদিত একমাত্র মেডিসিন হচ্ছে Minoxidil.
তেল, শ্যাম্পু বা ঔষধ কেনো কাজ করে না?
চুল পড়ার সমস্যা তিনটি কারণে হয়।
- একটি হচ্ছে বিভিন্ন রোগের কারণে
- দুই অযত্নের কারণে
- তৃতীয়তো বংশগত।
বিভিন্ন রোগের কারণে যেসব মানুষের মাথার চুল পড়ে যায় তাদের ক্ষেত্রে ঐ রোগের চিকিৎসা করলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়।আর যারা চুলের অযত্ন করেন,তাদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন তেল,শ্যাম্পু,ভেষজ ব্যবহার করলেই চুল পড়া বন্ধ হয়।কিন্তু যাদের চুল পড়ে বংশগত কারণে তাদের ক্ষেত্রে তেল,শ্যাম্পু বা কোনো ঔষধই কাজ করে না একমাত্র Minoxidil বাদে।
Minoxidil এর ইতিহাস
Minoxidil প্রথমে ১৯৭৯ সালে ব্যবহার করা হতো ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণের ঔষধ হিসাবে।পরবর্তীতে দেখা গেলো যেসব রোগীরা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য Minoxidil সেবন করছেন তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নতুন চুল গজাচ্ছে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে।
পরবর্তীকালে এ নিয়ে গবেষণা করে FDA প্রথমে 2% এবং পরবর্তীতে 5% Minoxidil সলিউশনকে নতুন চুল গজানোর ঔষধ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়।
Minoxidil কিভাবে কাজ করে?
Minoxidil কিভাবে কাজ করে এ বেপারে সঠিক তথ্যসূত্র আবিষ্কৃত হয়নি।তবে ধারণা করা হয় Minoxidil চুলের নিচের কোষগুলোতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
Minoxidil কারা ব্যবহার করবেন?
বংশগত কারণে যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে Minoxidil সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।Androgenic alopecia যেটা male pattern and female pattern baldness নামে পরিচিত।Male pattern Baldness এ প্রথমে তালু আর কপালের দিকের চুল পড়ে যায়।
তাছাড়া দেহের রোগ প্রতিরোধ সিস্টেম ধারা Hair follicle এ আক্রমণের ফলে চুল পড়ে গেলে সেক্ষেত্রেও Minoxidil নতুন চুল গজায়।
Minoxidil কিভাবে ব্যবহার করবেন?
Minoxidil সাধারণত সলিউশন রুপেই বেশি ব্যবহৃত হয়।তাছাড়া মুখে খাওয়া,ফোম হিসাবেও ব্যবহৃত হয়।Minoxidil সলিউশন 2% এব 5% দুটি অবস্থায় পাওয়া যায়।তবে 2% সলিউশন থেকে 5% সলিউশন বেশি কাজ করে।তবে আপনার জন্য কোনটি উত্তম তা জানার জন্য অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন।
ফার্মাসিতে Minoxidil 2% & 5% সলিউশন এর সাথে একটি ড্রপার থাকে,সেটি দিয়ে ১ মি লি পরিমাণ সলিউশন নিয়ে,যে জায়গায় চুল বেশি পড়ে যাচ্ছে,চুল কম সে জায়গায় দিতে হবে,তারপর আলতো করে ঘষে দিতে হবে,তবে জোরে ঘষা যাবে না।বলা রাখা ভালো ১ মিলি গড়ে ১৫ ফোঁটার সমান।
Minoxidil দিনে একবারের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।
Minoxidil কতো দিন ব্যবহার করবেন?
বংশগত সমস্যার কারণে যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে তাদের চুল গজানোর জন্য সবসময়ই এটি ব্যবহার করে যেতে হবে তেলের মতো করে।কারণ বংশগত চুল পড়া একবার শুরু হলে আর থামে না।
Minoxidil এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি?
Minoxidil ব্যবহার করলে ব্যবহৃত জায়গায় চুলকানো হয়,মাঝেমধ্যে খুব বেশি চুলকানো হয় এটা সহ্য করতে হবে।তাছাড়া Minoxidil ব্যবহার শুরু করার পর কিছুদিনের মধ্যেই আপনার চুল পড়ার পরিমাণ খুব বেশি বেড়ে যাবে।এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই,এটিই হচ্ছে লক্ষণ Minoxidil আপনার জন্য কাজ করবে।দুই থেকে তিন মাস পর আপনি ফলাফল দেখতে পাবেন এবং নতুন চুল গজানো শুরু হবে।
চুলকানো ছাড়া তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
সতর্কবাণী
আপনি প্রতিদিন যেমন তেল,শ্যাম্পু,সাবান ব্যবহার করেন Minoxidil কে ঠিক ঐভাবে প্রতিদিন ব্যবহার করতে হবে।নিয়মিত ব্যবহার না করলে ফল পাবেন না।আর পূর্বের মতো সব চুল ফিরে পেতে হলে অন্তত দেড় থেকে দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে।
বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের Minoxidil পাওয়া যায়,ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে খুব শীগ্রই এটি ব্যবহার করা শুরু করুণ।আর Minoxidil ই একমাত্র ঔষধ যা বংশগত কারণে যেসব চুল পড়ে যায় ঐগুলো নতুনভাবে গজায়।বাজারের অন্যান্য তেল,শ্যাম্পু,ঔষধ এর আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখে প্রতারিত হওয়া থেকে বাঁচুন।
লিখেছেন
ব্লগটি আপানার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন
-
Facebook
-
Linkedin
-
Whatsapp
-
Twitter
Leave a Reply