খাওয়ার পরেও মোটা না হওয়ার কারণ কী

যারা অত্যাধিক চিকন,তাদের জীবনের একটা বড় চাওয়া থাকে মোটা হওয়া। মোটা না হওয়ার কিছু লজিক্যাল কারণ আছে।আপনি হয়তোবা এমন কিছু করছেন যা মোটা হওয়ার বিরুদ্ধে।কারণগুলো কি হতে পারে?

আমিষ জাতীয় খাবার কম খাওয়া

মানুষের খাদ্য তালিকায় ছয়টি উপাদান রয়েছে।সেগুলো হচ্ছে,আমিষ,শর্করা,চর্বি,ভিটামিন,খনিজ লবণ এবং পানি।এর মধ্যে আমিষ বা প্রোটিন মানুষের শরীর গঠনে, শারীরিক বৃদ্ধিতে কাজ করে।

আমিষ জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে মাছ,মাংস,ডিম,দুধ,ডাল ইত্যাদি। আমিষ জাতীয় খাবার শরীর গঠন করে বা মোটাতাজা করে।
একজন মানুষের জন্য দিনে গড়ে তার ওজনের সমপরিমাণ গ্রাম আমিষ প্রয়োজন যা আপনি আমিষ জাতীয় খাবার থেকে পাবেন।অর্থাৎ কারো ওজন ৫০ কেজি হলে তাকে দিনে ৫০ গ্রাম আমিষ খেতে হবে।

দেড়শো গ্রাম আমিষ মানে এই না যে ৫০ গ্রাম আমিষ জাতীয় খাবার।অর্থাৎ আপনি যদি একশো গ্রাম মাছ খান তার মধ্যে আটারো গ্রাম থাকবে আমিষ।একটি ডিমে সাধারণত ৬ গ্রাম আমিষ থাকে।

ঠিক তেমনি অন্য খাবারের ক্ষেত্রেও একটা নির্দিষ্ট পারসেন্টেজে আমিষ পাবেন।এখন যদি আপনি একদিনে এর চেয়ে কম পরিমাণ আমিষ জাতীয় খাবার খান তাহলে আপনার শরীর গঠন ব্যাহত হবে।আপনি মোটা হতে পারবেন না।

খাবার এবং কাজের ভারসাম্য রক্ষা না করা

এখন আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার ঠিকি খেলেন কিন্তু কাজ করলেন বেশি।অর্থাৎ আয়ের চেয়ে ব্যায় বেশি হলো তাহলে আবার শরীর গঠন ব্যাহত হবে।এখন বলতে পারেন যে কাজ করার শক্তিতো আসে শর্করা জাতীয় খাবার চাল,আটা,গম থেকে।হ্যাঁ তা ঠিক কিন্তু এখানে একটা বেপার আছে।

ধরেন,আপনি শর্করা জাতীয় খাবার খেয়ে শরীরে পাঁচশো কিলো ক্যালরি শক্তি জমালেন।তারপর কাজ করলেন ছয়শো কিলোক্যালরি শক্তি খরচ করে।বাড়তি যে একশো কিলক্যালরি শক্তি সেটা কোথা থেকে আসলো?সেটা এসেছে প্রোটিন বা আমিষ ভাঙনের ফলে।শরীরের সব শক্তি যখন ব্যয় হয়ে যায়, শক্তি ব্যয় বলতে গ্লুকোজের ক্ষয়,তখন আমিষ থেকে গ্লুকোনিওজেনেসিস প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়,যা শক্তি যোগায়।

যে আমিষ শরীর গঠনে ব্যবহৃত হওয়ার কথা ছিলো,সেটা শক্তির যোগান দিতে ব্যয় হয়ে গেলো।যার কারনে এক্ষেত্রেও শরীর গঠন ব্যাহত হবে এবং আপনি মোটা হতে পারবেন না।
তারমানে আপনার কাজ আর খাবারের সামঞ্জস্য থাকতে হবে।যতটুকু শক্তি আপনি ব্যয় করেন সমপরিমাণ শক্তির শর্করা জাতীয় খাবার আপনাকে খেতে হবে।

হজমের সমস্যা

আবার অনেকের ক্ষেত্রে হজমের সমস্যা মোটা হওয়াতে বাধার কারণ হয়।ধরেন আপনি একশো গ্রাম মাংস খেলেন।এর থেকে বিশ গ্রাম আমিষ আপনার শরীর শোষণ করার কথা।কিন্তু হজমের সমস্যার কারণে মাত্র দশ গ্রাম বা এর থেকেও কম আমিষ আপনার শরীর শোষণ করলো,সেক্ষেত্রে বাকি আমিষটুকু বর্জ্যে পরিণত হলো।হজমের সমস্যা থাকলে আপনি যতই খান না কেনো,বেশিরভাগ খাবার বর্জ্যে পরিণত হবে।

খাবারের সময় ঠিক না থাকা

পরিমাণ মতো খাবার পরেও মোটা না হওয়ার একটি কারণ এটি।ধরেন,আপনি একবেলা পরিমাণ মতো খেলেন,কিন্তু তারপর দীর্ঘ সময় আর কিছু খেলেন না, তখন তিন-চার ঘন্টার মাঝে পাকস্থলীর সব খাবার হজম হয়ে যাবে।এরপর গ্লুকোজ শেষ হতে থাকবে,তারপর আবার প্রোটিন ভাঙা শুরু হবে।আপনার শরীর গঠন ব্যাহত হবে।


তাহলে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন আপনি কেনো মোটা হচ্ছেন না।কোন কারণটি আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়েছে সেটা চিন্তা করে দেখেন।আর এটাতো গেলো কেনো আপনি মোটা হচ্ছেন না,আর কিভাবে মোটা হবেন তা জানতে হলে আমাদের একটি আর্টিকেল আছে কিভাবে মোটা হবেন এই সংক্রান্ত।ইচ্ছে হলে পড়তে পারেন।

ধন্যবাদ।

ব্লগটি আপানার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন
লিখেছেন
Shaon Ashraf
শাওন আশরাফ -এমবিবিএস মেডিকেল স্টুডেন্ট,ঢাকা,বাংলাদেশ -স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আর্টিকেল লেখক -ইউটিউবার -ব্লগার
এখানে আপনার মন্তব্য লিখুন
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments